নিজস্ব প্রতিবেদক
নরসিংদী মডেল থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সৈয়দুজ্জামান (বর্তমানে মাধবদী থানার ওসি), উপপরিদর্শক (এসআই) মোস্তাক ও তাদের সোর্স সবুজ মিয়ার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও মারধরের অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে। আজ রোববার জেলার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফার্নিচার ব্যবসায়ী হুমায়ুন কবির মুন্সি বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) মিডিয়া উইং কর্মকর্তা উপপরিদর্শক রুপম কুমার সরকার। তিনি জানান, আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে আগামী ১৮ অক্টোবরের মধ্যে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করতে আদেশ দিয়েছেন।
মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়, হুমায়ুন কবির মুন্সি ও তার ছেলে আতিক দীর্ঘদিন ধরে নরসিংদী শহরের বানিয়াছল বটতলা বাজারে কাঠের ফার্নিচারের ব্যবসা করে আসছেন। করোনাভাইরাসের কারণে দোকান বন্ধ রাখার ঘোষণা বাজারের ব্যবসায়ীদের জানা ছিল না। গত ২১ জুন সন্ধ্যার পর ফার্নিচারের দোকান খোলা রাখার অপরাধে হুমায়ুন কবিরের ছেলে আতিকসহ বিভিন্ন দোকান থেকে ছয়জনকে মারধর করে ধরে নিয়ে যান সদর থানার এসআই মোস্তাক ও পুলিশের কথিত সোর্স সবুজ।
পরে নরসিংদী সদর মডেল থানা থেকে ছেলে আতিককে ছাড়িয়ে আনতে ফার্নিচার ব্যবসায়ী হুমায়ুন কবিরকে খবর দেন পুলিশের সোর্স সবুজ মিয়া। হুমায়ুন কবির থানায় গিয়ে জানতে পারেন মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তার ছেলে আতিক ছাড়া অন্যান্যদের ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।
এসময় ছেলেকে ছাড়ানোর জন্য অনুরোধ করলে নরসিংদী মডেল থানার তৎকালীন ওসি সৈয়দুজ্জামান ও এসআই মোস্তাক দুই লাখ টাকা দাবি করেন। দাবিকৃত টাকা না দিলে ছেলেকে ক্রসফায়ারে মেরে ফেলার হুমকি দেন তারা। নিরুপায় হয়ে ছেলেকে বাঁচানোর জন্য ৫০ হাজার টাকা দেন হুমায়ুন। পরে বাকি টাকা দিতে না পারায় আতিককে নির্যাতন করা হয় এবং পরদিন একটি পুরোনো (পেনডিং) ডাকাতি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়।
মামলার বাদী হুমায়ুন কবির মুন্সি বলেন, ‘আমার ও আমার ছেলের বিরুদ্ধে এর আগে থানায় কোনো অভিযোগ পর্যন্ত নেই। অথচ ওসি সৈয়দুজ্জামান ও এসআই মোস্তাক বিনা অপরাধে ধরে নিয়ে অমানবিক নির্যাতন চালিয়েছে। দাবিকৃত চাঁদার পুরো টাকা দিতে না পারায় ডাকাতির মামলায় কোর্টে চালান করে দিয়েছে। আমার নিরপরাধ ছেলেটার জীবন নষ্ট করে দিয়েছে তারা। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।’
এ বিষয়ে ওসি সৈয়দুজ্জামান বলেন, ‘মামলার বিষয়টি আমার জানা নেই। এখনো কোনো কাগজপত্র পাইনি। আর কোন ঘটনায় মামলা হয়েছে সেটা খেয়াল করতে পারছি না। কত ঘটনাই তো থাকতে পারে।